বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১১:৩৩ অপরাহ্ন

অদম্য মেধাবী এক বিশ্বজয়ী রাশেদ হাসানের সফলতার গল্প

অদম্য এক মেধাবীর গল্প

গল্পটা যখন সত্যি।
রাশেদ হাসান চৌধুরী। অতি মেধাবী দীপ্ত। সাধারণ শিক্ষার্থী থেকে একজন গবেষক। দেশের গন্ডি থেকে এখন আন্তর্জাতিক মানে।একের পর এক সেরাটা দিয়েই রাশেদের গল্পের শুরু।
রাশেদের বাবা মাওলানা মোঃ আলী হোছাইন। স্থানীয় মাতাব্বরনগর আলিম মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ। বাবার ওই মাদ্রাসা থেকেই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের পড়াশোনা তার। সেখানের কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল সেদিন স্বপ্নের বীজ হয়ে ওঠে তার। উচ্চ শিক্ষায় আগ্রহী হয়ে ওঠা রাশেদ চান্স পায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্বপ্ন দেখছেন আকাশ ছোঁয়ার।
বিভাগের ফাস্ট হওয়ার গৌরব ছিনিয়ে নেন তিনি। গ্রাম থেকে ওঠে আসা মাদ্রাসা পড়ুয়া রাশেদের দেশিয় সাফল্য স্বীকৃতিতে মেলে রাষ্ট্রপতি এ্যাওয়ার্ড। মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ কতৃক স্বর্ণপদক প্রাপ্ত হন এ গল্পের নায়ক রাশেদ হাসান।
এরপর তিনি স্কলারশিপ নিয়ে গবেষণার জন্য চান্স পেয়ে ভর্তি হন বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ তুরস্কের আঙ্কারা ইউনিভার্সিটিতে।
সেখানের সেরাটা নিয়ে গল্পটা তার দেয়া ফেসবুক স্টাটাস থেকে নেয়া।
“আলহামদুলিল্লাহ। এই ছোট্ট জীবনে আল্লাহ্‌ তার এই অধমকে এতো বেশি সফলতা দিয়েছেন, যার কৃতজ্ঞতা প্রশংসা বা শোকরিয়া জানানোর কোন ভাষা খুজে পাই নাই। আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-২০১৯ স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় সর্বোচ্চ সিজিপিএ ৪.০০ এর মধ্যে ৪.০০এবং থিওোলোজি ফ্যাকাল্টিতে রেকর্ড সংখ্যক মার্কস পেয়ে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়ে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেজেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের কাছ থেকে মোস্ট সাকসেসফুল স্টুডেন্ট এ্যাওয়ার্ড ২০১৯ (এন বাসারলি ওরেঞ্জি অদুলো) পেয়ে নিজেকে গর্বিত মনে হচ্ছে। গত বছর অক্টোবর মাসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদের কাছ থেকে স্বর্ণপদক পেয়েছিলাম, তখন অসাধরণ অনুভূতি হয়েছিল। পাশাপাশি গত পরশু তার্কিশ প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে ১৭৭ দেশের মধ্য থেকে বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে যখন এই অ্যাওয়ার্ডটি পেয়েছিলাম, তখন অনুভূতি প্রকাশ করার মত ছিল না। এরদোয়ানকে বাংলাদেশের সবার পক্ষ থেকে সালাম এবং মুবারকবাদ দিয়েছিলাম। শুকরিয়া মহান প্রভূর, শিক্ষক মহাদয়গণের অসম্ভব আন্তরিকতা, সহপাঠীদের সহযোগিতা, পিতা-মাতা এবং ছোট ভাই-বোনদের পাহাড় পরিমাণ আন্তরিকতা, সাহস ও দোয়ায় আমাকে এনে দিয়েছে এ সফলতা। পাশাপাশি স্মরণ করছি বড় ভাইয়া ও শোভাকাঙ্খিদের প্রতি, যারা আমাকে খুব বেশি সহযোগিতা ও দোয়া করেন। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, যেন দেশ ও জাতির কল্যাণে নিবদিত হয়ে কাজ করতে পারি।”

একইসাথে রাশেদ তার এই অভূতপূর্ব অর্জন সূদর তুরস্ক থেকে তার আব্বু ও আম্মু দুইজনকে এই অ্যাওয়ার্ডটি উৎসর্গ করেছেন।

অধ্যক্ষ মাওলানা আলী হোছাইন দম্পতির অপর দুই ছেলেও অদম্য মেধাবী দীপ্ত। একজন তারেক মাহমুদ। সে মিশরের আল-আজহার থেকে একটি কোর্স সম্পন্ন করে বর্তমানে মদিনা ইউনিভার্সিটিতে ইসলামিক আইন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করছেন আর অপর ছোট ছেলে নাফিস মাহমুদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত।

আমরা স্থানীয় কমলনগর উপজেলার প্রতিষ্ঠান প্রধানদের পক্ষ থেকে একজন আদর্শ প্রতিষ্ঠান প্রধান ও একইসাথে গর্বিত পিতা-মাতার প্রতি শ্রদ্ধা ভালোবাসা ও অভিনন্দন জ্ঞাপন করছি।

-মিজানুর রহমান মানিক
প্রধান শিক্ষক
চরবসু SESDP মডেল উচ্চবিদ্যালয়
কমলনগর, লক্ষ্মীপুর

সাংবাদিক

নিউজটি শেয়ার করুন:


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2018 Priyo Upakul
Design & Developed BY N Host BD
error: Content is protected !!