বৃহস্পতিবার, ০৮ জুন ২০২৩, ০৩:৪২ পূর্বাহ্ন

কমলনগর আ’লীগের সম্মেলন : শীর্ষ নেতৃত্বে ভোট না সমঝোতা, নতুন না পুরাতন

নিজস্ব প্রতিবেদক : দীর্ঘ নয় বছর পর লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন আজ (বৃহস্পতিবার) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। রামগতি উপজেলা থেকে পৃথক হওয়ার পর ২০১৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি এ উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সম্মেলনকে সফল করার লক্ষে ইতোমধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগ সকল ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন। নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার। তবে, এ সম্মেলন ঘিরে দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। ভোট না সমঝোতা-কোন পদ্ধতিতে নির্বাচিত হবে শীর্ষ দুই নেতৃত্ব; নতুন না পুরাতন কারা ধরবেন দলের হাল-এ নিয়ে চলছে জোর জল্পনা-কল্পনা।
জানা গেছে, উপজেলার হাজিরহাট উপকূল সরকারি কলেজ মাঠে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। সকাল ১০টায় সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শুরু হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে সাবেক বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী একেএম শাহজাহান কামাল, আওয়াম লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হারুনুর রশিদ এবং ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিদ রায় নন্দী উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে মাঠে মঞ্চ তৈরিসহ সাজ-সজ্জার কাজ শেষ হয়েছে। সম্মেলনকে ঘিরে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তোরণ নির্মাণসহ পদপ্রত্যাশীদের ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো এলাকা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলনে কাউন্সিলর হিসেবে উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের ৩১ জন করে ২৭৯ এবং উপজেলা পর্যায়ের ৮২ জনসহ ৩৬১ জন কাউন্সিলর তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। দুই শীর্ষ পদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নয়জন পদপ্রত্যাশী নিজ নিজ পক্ষে সমর্থন নেওয়ার জন্য কাউন্সিলরদের দ্বারে দ্বারে ছুঁটেছেন। শীর্ষ এ দুই পদে নেতা নির্বাচনে জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতারা ভোট না সমঝোতা-কোন পদ্ধতি বেছে নিবেন তা নিয়ে কৌতুহল সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি নতুন না পুরাতন কারা নেতৃত্বে আসছেন-তা নিয়ে সকলের মাঝে জোর জল্পনা-কল্পনা চলছে।
তবে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীদের দাবি, কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হলে যোগ্যরাই দলের নেতৃত্বে আসার সুযোগ পাবে। এতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন বৃদ্ধির পাশাপাশি দল অনেক উপকৃত হবে।
কাউন্সিলরসহ দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে তিন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ছয়জন পদপ্রত্যাশী তাদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টায় রয়েছেন। এরা হচ্ছেন-সভাপতি পদপ্রত্যাশী ও বর্তমান সভাপতি চরলরেন্স ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম নুরুল আমিন মাস্টার, বর্তমান সিনিয়র সহসভাপতি ও হাজিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নিজাম উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মনিরুল হক মিয়া এবং সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী ও বর্তামন সাধারণ সম্পাদক পাটারীরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম নুরুল আমিন রাজু, সাবেক সাংসদ প্রয়াত সিরাজুল ইসলামের ছেলে মাহবুবুল ইসলাম দোলন, পাটারীরহাট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান একেএম রাশেদ বিল্যাহ আলমগীর, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক ও চরলরেন্স ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান উল্যাহ হিরন, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ফজলুল হক সবুজ ও তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বিপ্লব।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম নুরুল আমিন মাস্টার বলেন, সম্মেলন সফল করতে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। দীর্ঘদিন পর এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাওয়ায় সকলের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
তিনি বলেন, নেতৃত্ব নির্বাচনের পদ্ধতি জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতারা সিদ্ধান্ত নিবেন। ওনারা যে সিদ্ধান্ত নিবেন উপজেলা আওয়ামী লীগসহ তৃণমূল নেতাকর্মীরা তা মেনে নিবেন বলে আমি বিশ^াস করি।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু জানান, এ সম্মেলনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে দলকে গতিশীল করা এবং দলের ভেতর নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রাখা। তাই, সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষ করে দ্বিতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় অধিবেশনে পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে সমঝোতা না হলে ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন:


Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2018 Priyo Upakul
Design & Developed BY N Host BD
error: Content is protected !!