বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৪:৪১ অপরাহ্ন

কমলনগরে ১০ হাজার একর ফসলি জমি পানির নিচে

নিজস্ব প্রতিবেদক : লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার প্রায় ১০ হাজার একর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে রয়েছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে টানাবৃষ্টি ও মেঘনার অস্বাভাবিক জোয়ারে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে এক সপ্তাহ ধরে ওইসব কৃষি জমি পানির নিচে তলিয়ে থাকায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ৪৫ হাজার একর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ১০ হাজার একর জমি এখন টানাবৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে ডুবে রয়েছে।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লঘুচাপের প্রভাবে শনিবার থেকে টানাবৃষ্টির পাশাপাশি মেঘনার জোয়ারের পানি অস্বাভাবিক বাড়তে থাকে। এতে উপজেলার মেঘনা তীরবর্তী মতিরহাট, নাছিরগঞ্জ, পশ্চিম মার্টিন, হাজীগঞ্জ, চরলরেন্স, কাদিরপণ্ডিতের হাট, পশ্চিম চরলরেন্স, চরজগবন্ধু, চরফলকন ও দক্ষিণ ফলকনসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলীয় এলাকার আমন ধান খেত ও শাকসবজি পানিতে তলিয়ে যায়।
উপজেলার চরমার্টিন এলাকার কৃষক তোফায়েল আহাম্মেদ জানান, প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ করে তিনি দুই একর জমিতে আমন আবাদ করেছেন। জোয়ারের নোনা পানিতে জমে থাকায় আমনের চারাগুলো এখন নষ্ট হয়ে গেছে।
চরফলকন এলাকার কৃষক মো. হানিফ জানান, চলতি মৌসুমে তিনি প্রায় পাঁচ একর জমিতে আমনের আবাদ করেছেন। সেই রোপা আমনখেত বৃষ্টি ও জোয়ারের নোনা পানিতে ডুবে রয়েছে। পানি আরও কিছুদিন জমে থাকলে রোপা আমন নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে তিনি জানান।
চরকালকিনি এলাকার কৃষক আব্দুল মন্নান জানান, জোয়ারের পানিতে তার ২০ শতক জমির শসা খেত এখন পানিতে তলিয়ে রয়েছে। যে কারণে গাছ পচে যাওয়ায় তিনি মারাত্মক ক্ষতির শিকার হয়েছেন বলে জানান।
উপজেলার চরকালকিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাস্টার ছায়েফ উল্যাহ ও পাটারীরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম নুরুল আমিন রাজুসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা জানান, মেঘনার ভাঙনে বিলীন হওয়া বেড়িবাঁধ পুনর্নির্মিত না হওয়ায় জোয়ার বাড়লেই এলাকাগুলো প্লাবিত হয়ে যায়। এতে নোনা পানিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়াসহ এলাকাবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. ইকতারুল ইসলাম জানান, প্রায় ৫০ একর শাকসবজিসহ মেঘনা তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকার ১০ হাজার একর আমন ধান খেত এখন বৃষ্টি ও অধিক উচ্চতার জোয়ারের পানিতে ডুবে রয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে পানি সড়ে গেলে আমনের ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা কম হলেও শাকসবজি নষ্ট হয়ে গেছে। তাছাড়া পানি স্থায়ী হলে আমনচাষিরাও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন বলে তিনি জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন:


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2018 Priyo Upakul
Design & Developed BY N Host BD
error: Content is protected !!