বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৪:২৪ অপরাহ্ন

চার বছর পর হতদরিদ্ররা জানলেন তাদের নামে চালের কার্ড আছে!

নিজস্ব প্রতিবেদক : লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার বড়খেরী ইউনিয়নের তিন হতদরিদ্রের নাম রয়েছে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুবিধাভোগীর তালিকায়। তালিকা অনুযায়ী ইস্যুকরা কার্ড দিয়ে ২০১৬ সাল থেকে নিয়মিত চালও উত্তোলন হয়েছে। কিন্তু ওই হতদরিদ্ররা তাদের নামে কার্ড থাকার বিষয়টি জানলেন চার বছর পর। অভিযোগ উঠেছে এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে খাদ্য অধিদপ্তরের নিয়োগকৃত ডিলার মো. ফারুক ওই সব হতদরিদ্রের নামে বরাদ্দকৃত চাল মাস্টাররোল ও কার্ডে জাল টিপ-সই দিয়ে বিতরণ দেখিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ওই তিন হতদরিদ্র উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকায় নাম তুলতে বড়খেরী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হতদরিদ্র শাহাদাত হোসেন (কার্ড নম্বর-৫১১), নিজাম উদ্দিন (কার্ড নম্বর-৬৩০) ও সেলিনা আক্তার (কার্ড নম্বর-৬৮৬) ২০১৬ সালে জনপ্রতিনিধিদের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেন। ওই বছরের সেপ্টম্বর মাস থেকে খদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী সদস্য (৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড) শামছুর নাহার লাবনীর স্বামী মো. ফারুক সুবিধাভোগীদের মাঝে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণ শুরু করেন। কিন্তু ওই হতদরিদ্ররা তাদের কার্ড সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সুবিধাভোগীদের নাম ওয়েবসাইটে আপলোড দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলে বিষয়টি ধরা পড়ে। স্থানীয় গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারেন তারা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকাভুক্ত এবং গত চার বছর ধরে তাদের নামে চাল উত্তোলন করা হচ্ছে। চার বছরে প্রত্যেকের নামে ২১ কিস্তিতে ১০টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল উত্তোলন করা হলেও তাদের ভাগ্যে এক কেজি চালও জোটেনি।
ক্ষতিগ্রস্ত ওই সব হতদরিদ্রের অভিযোগ, তাদের নামে ইস্যু করা কার্ড ডিলার তাদেরকে না দিয়ে চার বছর ধরে ভুয়া টিপ-সইয়ের মাধ্যমে বিতরণ দেখিয়ে চালগুলো আত্মসাৎ করেছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার মো. ফারুক জানান, চাল আত্মসাতের সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত নন। কার্ডধারীদের মাঝেই তিনি চাল বিতরণ করেছেন।
কিন্তু চার বছর ধরে ওই তিন হতদরিদ্রের চাল কে উত্তোলন করেছেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
এদিকে ওই ডিলারের তদারকি কর্মকর্তা ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মোশারেফ হোসেন জানান, শুধু এ তিন জনেরই নয়; উল্লেখিত ডিলারের বিরুদ্ধে আরও অনেক কার্ডধারীর চাল আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে। অনিয়ম করার উদ্দেশ্যে ডিলার চাল বিতরণের সময় তার সঙ্গে কোনো সমন্বয় করতেন না বলে তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল মোমিন অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন:


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2018 Priyo Upakul
Design & Developed BY N Host BD
error: Content is protected !!