বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪০ পূর্বাহ্ন

রামগতির বহদ্দারহাট লঞ্চঘাট ইজাড়ায় অনিয়মের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার বহদ্দারহাট লঞ্চঘাট ইজাড়ায় অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ উঠেছে চাঁদপুর নদী বন্দরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নীতিমালা অমান্য করে মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে স্পট কোটেশনের মাধ্যমে ১ জুলাই থেকে ঘাটটি একমাসের জন্য ইজাড়া দিয়েছেন। ঘাটটির সদ্য সাবেক ইজাড়াদার যোবায়ের হোসেন বৃহস্পতিবার রামগতি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন। এ সময় তিনি অনিয়মের মাধ্যমে হওয়া এ ইজারা প্রক্রিয়া বাতিল করে এর সঙ্গে সম্পৃক্তদের শাস্তির দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে যোবায়ের হোসেন জানান, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিওটিএ) চাঁদপুর নদী বন্দরের আওতাধীন রামগতি উপজেলার বহদ্দারহাট লঞ্চঘাটটি সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের জন্য ইজাড়া নিয়ে তিনি দীর্ঘ এক বছর ধরে পরিচালনা করে আসছেন। করোনাকালে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় টোল আদায় করতে না পেরে তিনি আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্তও হন। যে কারণে চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরের জন্য আহ্বান করা ইজাড়া প্রক্রিয়ায় কেউ অংশ নেয়নি। ইজাড়া নীতিমালা অনুযায়ী নতুন অর্থবছরে একমাসের টোল আদায়ের জন্য উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করে স্পট কোটেশনের মাধ্যমে সর্বোচ্চ দরদাতাকে ইজাড়া দেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু চাঁদপুর নদী বন্দরের দায়িত্বপ্রাপ্ত বন্দর কর্মকর্তা একেএম কায়সারুল ইসলাম ওই নীতিমালা অমান্য করে রাতের আধাঁরে মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে মো. ইমরান হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে ঘাটটি জুলাই মাসের জন্য ইজাড়া দিয়েছেন। এতে তার ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষা হলেও সরকার অনেক টাকা রাজস্ব হারিয়েছেন।
তিনি বলেন, স্পট কোটেশনে ইজাড়ার ক্ষেত্রে পূর্বের ইজাড়াদারের অগ্রাধিকার থাকার কথা বলে ওই কর্মকর্তা গত মঙ্গলবার (৩০ জুন) তার কার্যালয়ে আমাকে ডেকে নেন। এ সময় এক মাসের ইজাড়ার জন্য দর নির্ধারণ করে আমার নামে ঘাটটি ইজাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্তও হয়। এক্ষেত্রে তিনি আমার কাছে অতিরিক্ত এক লাখ টাকা ঘুষ দাবি করলে আমি তাৎক্ষণিক ২০ হাজার টাকা নগদ দিয়ে দেই। পরদিন ইজাড়ার টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যমে জমা দিতে চাইলে তিনি তার কাছে নগদ দেওয়ার জন্য বলেন। কিন্তু এরই মধ্যে আমি জানতে পারি ওই কর্মকর্তা আমার সঙ্গে ইজাড়ার নির্ধারিত অঙ্কের চেয়ে কম অর্থে ইমরান নামে ওই ব্যক্তিকে ঘাটটি ইজাড়া দিয়েছেন। সরকারের রাজস্বের কথা বিবেচনা না করে সম্পূর্ণ নিজের স্বার্থের জন্য তিনি এ কাজটি করেছেন।
এ ঘটনায় তিনি বিআইডব্লিওটিএ’র চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ার কথা উল্লেখ করে অনিয়মের মাধ্যমে দেওয়া এ ইজাড়া প্রক্রিয়া বাতিল করে নতুন করে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে ইজাড়া দেওয়ার দাবি জানান।
এদিকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে চাঁদপুর নদী বন্দরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিআইডব্লিওটিএ’র বন্দর ও পরিবহন বিভাগের উপ-পরিচালক একেএম কায়সারুল ইসলাম জানান, নিয়ম অনুযায়ী স্পট কোটেশনের মাধ্যমে সর্বোচ্চ দরদাতাকে একমাসের জন্য তিনি ঘাটটি ইজাড়া দিয়েছেন। ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ সত্য নয় বলে তিনি দাবি করেন।
এ ব্যাপের বিআইডব্লিওটিএ’র বন্দর ও পরিবহন বিভাগের পরিচালক কাজী ওয়াকিল নেওয়াজ বলেন, ঘাট ইজাড়া প্রক্রিয়ায় কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন:


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2018 Priyo Upakul
Design & Developed BY N Host BD
error: Content is protected !!