শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৩৩ পূর্বাহ্ন

মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড করে দেওয়ার নামে আ’লীগ নেতার প্রতারণা

নিজস্ব প্রতিবেদক : লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড করে দেওয়াসহ সরকারি বিভিন্ন সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণা করার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। গ্রামের অশিক্ষিত দরিদ্র নারীদেরকে নানান কৌশলে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে সরকারি সুবিধাভোগীর তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির আশ্বাসে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে তিনি এ প্রতারণা করছেন। তার এসব ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগী পাঁচ নারী রোববার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযুক্ত ওই আওয়ামী লীগ নেতার নাম মো. গোফরান। তিনি উপজেলার চরজগবন্ধু এলাকার মো. মোহসীনের ছেলে এবং সাহেবেরহাট ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে দায়ের করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগে নেতা গোফরান ২০১৮ সালে অগ্রিম পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে মাতৃত্বকালীন ভাতার তালিকায় চরজগবন্ধু এলাকার মো. রিপনের স্ত্রী নাছিমা আক্তারের নাম অন্তর্ভুক্ত করান। নাম তালিকাভুক্তির পর ব্যাংক থেকে ছয় মাসের ভাতার টাকাও উত্তোলন করেন নাছিমা। কিন্তু এর পর থেকে ভাতার টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের (বিকাশ) মাধ্যমে পরিশোধ হয়ে আসলেও নাছিমার নম্বরে কোনো টাকা যায়নি। বিষয়টি জানতে তিনি উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে জানতে পারেন মোবাইল একাউন্টের তালিকায় দেওয়া বিকাশ নম্বরটি তার নয়। সেখানে আওয়ামী লীগ নেতা গোফরানের বিকাশ নম্বর দেওয়া এবং ওই নম্বরেই বিভিন্ন সময়ে ভাতার ১৪ হাজার ৪০০ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। পরে তিনি ওই টাকার জন্য গোফরানসহ স্থানীয় গণ্যমান্যদের কাছে বারবার ধরনা দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। উল্টো বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য তাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেওয়া হয়।
অভিযোগকারী অপর চার নারী একই এলাকার মো. মহিউদ্দেনের স্ত্রী রাবেয়া বেগম, মো. সোহেলের স্ত্রী রেখা আক্তার, মো. গণির স্ত্রী নাসিমা বেগম ও মো. আকরামের স্ত্রী রুনা আক্তার জানান, মাতৃত্বকালীন ভাতা, ভিজিডি’র কার্ড ও গৃহহীনদের জন্য দেওয়া ঘরসহ সরকারি বিভিন্ন সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে গোফরান তাদের কাছ থেকে পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা করে নিয়েছেন। দীর্ঘ সময় পার হলেও সেই সুবিধা না পেয়ে গোফরানের কাছে তারা টাকা ফেরৎ চান। কিন্তু এখন পর্যন্ত ওই টাকা ফেরৎ পাননি।
তাদের অভিযোগ, গোফরান এভাবে এলাকার আরও অনেকের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। ক্ষমতাসীন দলের লোক হওয়ায় তার এসব প্রতারণার বিরুদ্ধে অনেকেই প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেন না।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা মো. গোফরান জানান, মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড করে দেওয়ার সময় নাছিমার তাকে পাঁচ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু কার্ড হয়ে যাওয়ার পর সে আর টাকা দেয়নি। যে কারণে বিকাশ একাউন্টের তালিকা তৈরির সময় নাছিমার মোবাইল নম্বরের পরিবর্তে তিনি নিজের মোবাইল নম্বরটি দিয়ে দেন। তবে, অপর নারীদের সঙ্গে প্রতারণার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি পরে কথা বলবেন বলে জানান।
উপজলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোবারক হোসেন অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, তদন্ত করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন:


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2018 Priyo Upakul
Design & Developed BY N Host BD
error: Content is protected !!