শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৮:০৬ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় হতদরিদ্র মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণে সমন্বয়হীনতা দেখা দিয়েছে। এতে করে কেউ কেউ একাধিকবার ত্রাণ পেলেও একেবারেই কিছু পাচ্ছেন না অনেকে। ফলে উপজেলার প্রান্তিক পর্যায়ের অনেক হতদরিদ্র মানুষ ত্রাণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আবার সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করায় রয়েছে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিও। সব মিলে এখানে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণে দেখা দিয়েছে হ-য-ব-র-ল অবস্থা।
জানা গেছে, এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকয় সরকারি উদ্যোগ ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতকি দলের নেতা, বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠন ও বিত্তশালী ব্যক্তির উদ্যোগে ত্রাণসহ সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় এসব ত্রাণ সমাগ্রী বিতরণকালে বিশৃঙ্খলাও দেখা দেয়। কেউ কেউ এসব বিতরণে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে বিতরণ করেছেন; আবার এসব ত্রাণ সমাগ্রী বিতরণে সমন্বয় না থাকায় যে যার যার মতো যে কোনো এলাকায় বিতরণ করেছেন। বেশির ভাগ বিতরণই উপজেলার মূল সড়ক বা হাট-বাজার কেন্দ্রিক হওয়ায় একই ব্যক্তি একাধিকবার সহায়তা পেয়েছেন। কিন্তু প্রান্তিক পর্যায়ের অনেক হতদরিদ্র পরিবার এ সহায়তার বাইরে রয়ে গেছেন। আবার সড়ক বা বাজার কেন্দ্রিক ত্রাণ সমাগ্রী বিতরণ করায় ত্রাণের আশায় হতদরিদ্র মানুষগুলো বাড়ি থেকে বাইরে এসে বাজার বা সড়কে অবস্থান করছেন বলে মনে করছেন অনেকে। এতে করে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়েছে বলে ধারণা তাদের। যে কারণে, সমন্বয়ের মাধ্যমে সঠিকভাবে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের দাবি জানিয়েছেন এলাকার সচেতন ব্যক্তিরা। একই সাথে ত্রাণ সমাগ্রী বিতরণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে হতদরিদ্রের বাড়িতে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার দাবি জানান তারা।
উপজেলার হাজিরহাট এলাকার সমাজকর্মী ওমর ফারুক জানান, ব্যক্তি বা সংগঠনের উদ্যোগে দেওয়া খাদ্য সামগ্রীগুলো বারবার উপজেলা সদর কেন্দ্রিক দেওয়ায় উপজেলার প্রান্তিক চরাঞ্চলের হতদরিদ্ররা বঞ্চিত হচ্ছেন। যারা যারা ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করবেন তারা একজন অপরজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিতরণ করলে এ অবস্থার সৃষ্টি হতো না বলে অভিমত তার।
চরফলকন এলাকার সমাজকর্মী শিব্বির দেওয়ান বলেন, সমন্বয়হীনতার কারণে এখনও প্রান্তিক পর্যায়ের অনেক হতদরিদ্র পরিবার খাদ্য সহায়তা পায়নি। জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতা, শিক্ষক ও ইমামসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে ওয়ার্ড ভিত্তিক তালিকা তৈরি করে প্রশাসনের সমন্বয়ে ত্রাণ বিতরণ করা হলে কেউ বঞ্চিত হবে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোবারক হোসেন জানান, হতদরিদ্র কোনো পরিবার যাতে খাদ্য সহায়তা থেকে বঞ্চিত না হয় সেজন্য ওয়ার্ড অনুযায়ী তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এখন থেকে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠন খাদ্য সহায়তা দিতে চাইলে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
তিনি বলেন, সরকারিভাবে ইতোমধ্যে উপজেলার নয়টি ইউনিয়নে ১৮ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৯০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। আরও ১৮ মেট্রিক চাল ও ৯০ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। তালিকা অনুযায়ী সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে হতদরিদ্রদের বাড়িতে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হবে।
Leave a Reply