বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১০:১১ অপরাহ্ন

কমলনগরে নির্দেশনা অমান্য করে জনসমাগম, বসছে সাপ্তাহিক হাট

নিজস্ব প্রতিবেদক : মরণঘাতী করোনাভইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের দেওয়া নির্দেশনা মানছেন না লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার সাধারণ মানুষ। উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী মানুষকে সচেতন ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও করোনা সংক্রমণ রোধে জনস্বার্থে নেওয়া ওই সব কার্যক্রম মানছেন না তারা। এমনকী সাপ্তাহিক হাট বন্ধের ব্যাপারে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনা মানছেন না বাজারের ইজারাদাররাও। সংক্রমণ ঝুঁকি নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে এখনও সাপ্তাহিক হাট বসছে। এছাড়া ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়ে উপজেলা সদরসহ মূল সড়কের বাজারগুলোতে নির্দেশনা কিছুটা বাস্তবায়ন হলেও অভ্যন্তরীণ সড়কের বাজারগুলোর চিত্র একেবারেই ভিন্ন। এতে সরকার প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও জনসাধারণের এমন কর্মকাণ্ডের করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন সচেতন ব্যক্তিরা।
জানা গেছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন ২৪ মার্চ সাপ্তাহিক হাট বন্ধ রাখাসহ ওষুধ, মুদি ও কাঁচামালের দোকান ছাড়া অন্যসব দোকান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। তখন জরুরী প্রয়োজন ছাড়া মানুষকে ঘর থেকে বের না হতে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়। নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নের জন্য উপজেলা প্রশাসনসহ জনপ্রতিনিধিরা জনসাধারণকে সচেতন করতে মাইকিং করে প্রচারণাও চালিয়েছেন। তাছাড়া পুলিশ ও সেনাবাহিনীসহ তৎপর রয়েছেন এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে। কিন্তু এসব উদ্যোগের মধ্যেও জনস্বার্থে নেওয়া নির্দেশনাগুলো মানা হচ্ছে না। রাস্তা-ঘাট ও হাট-বাজারে কোনোভাবেই কমছে না জনসমাগম। প্রশাসনের তৎপরতার কারণে মূল সড়কে থাকা উপজেলা সদর হাজিরহাট, করুনানগর, লরেন্স, করইতলা ও তোরাবগঞ্জ বাজারে নির্দেশনা কিছুটা বাস্তবায়ন হলেও অন্যান্য বাজারগুলো চলছে আগের মতোই। দোকানপাট খোলা থাকার পাশাপাশি সোমবার উপজেলার খায়েরহাট ও ফজুমিয়ারহাটে সাপ্তাহিক হাট বসতে দেখা গেছে। এমনকী মঙ্গলবার উপজেলা সদর হাজিরহাট বাজারেও সাপ্তাহিক হাট বসানো হয়। এসব হাটগুলোতে ক্রেতাদের প্রচ- ভিড় দেখা যায়। তাছাড়া অভ্যন্তরীণ সড়কের বাজারগুলোতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠা আগের মতো খোলা থাকায় এবং কর্মজীবীদের সাধারণ ছুটি থাকায় ওই সব বাজারে উৎসবমুখর পরিবেশ চলছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বা এক মিটার দূরত্ব রেখে চলাচলের নির্দেশনা থাকলেও জনসাধারণ বাস্তবে তার কিছুই মানছেন না। বরং জটলা পাকিয়ে চায়ের দোকানে আড্ডা দেয়াসহ বাজারগুলোতে তাদের রয়েছে অবাধ বিচরণ। প্রশাসন আসার কথা শুনলে সাময়িক সময়ের জন্য দোকান বন্ধ করে ব্যবসায়ীরা গাঁ-ঢাকা দিলেও প্রশাসন যেতেই ফিরে আসে পুরোনো চেহারা।
উপজেলার খায়েরহাট বাজারের পল্লী চিকিৎসক আসাদুজ্জামান মাছুম জানান, সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ওই বাজারে এখনও সাপ্তাহিক হাট বসানো হয়। বাজার ইজারাদারকে হাট বন্ধ রাখার নির্দেশনার ব্যাপারে বললে ইজারাদার উল্টো ক্ষিপ্ত হন বলে তিনি জানান। এতে করে হাটে ক্রেতাদের প্রচণ্ড ভিড় থাকায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সংবাদকর্মী বলেন, উপজেলার অধিকাংশ অভ্যন্তরীণ বাজারে এখনও সাপ্তাহিক হাট বসে। এসব হাটে মানুষের গা-ঘেঁষাঘেষি করা জটলা থাকে। সামাজিক নিরাপদ দূরত্ব বলতে তারা কিছু বুঝতে চান না। যে কারণে আমরা করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মারত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোবারক হোসেন জানান, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জনসাধারণকে ওষুধ ও নিত্যপণ্য কেনার জন্য বলা হলেও কেউ কেউ তা মানছে না। তাছাড়া সাপ্তাহিক হাট বসানো ইজারাদার ও নিদের্শনা অমান্যকারী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন:


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2018 Priyo Upakul
Design & Developed BY N Host BD
error: Content is protected !!