বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৩১ পূর্বাহ্ন
বাহুবদ্ধ দিন
শুকনো পাতার শিরায় লুকিয়ে আছে পিঁপড়া-জীবন! অন্ধমাহুত জানে কীভাবে রেখা ও রঙ ছড়িয়ে
যায় মৃত প্রজাপতি। কত যে সবুজ প্রণালী মিশে গেছে কামপোড়া ঘুঘুর কণ্ঠের ভেতর!
পঞ্চঋতু মারা গেলে বসন্তের জ্বর আসে। তপ্ত দেহের বিপরীতে ছড়িয়ে যায় গীতল হাওয়া। আমার
ফেরারি মন পার হয় পাহাড়ের চুড়ো। হত্যাপ্রবণ রাতে কীসের মাদল বাজিয়ে জাগিয়ে রাখো
চোখের মায়া! উল্কির ইশারায় সতর্ক হয় বনের হরিণ। মেঘের কার্নিশে আঁকা হচ্ছে বাহুবদ্ধ দিন।
আত্মপক্ষ
এই ঘাসে ঘাসে কেটে গেলে বেলা, স্মৃতিচিহ্ন জেগে ওঠে শোকবাহী গোধূলির ছাদে। কথার চাবুকে
মেশে না মনের ডোরাকাটা দাগ। আঙুলের ফসিল জানে বিলিকাটা নখের ব্যঞ্জন। সূর্যের সিঁথানে
পোড়ে হননের গান। বাজুবন্দ খুলে গেলে পোড়ে দেখো পায়েরও পাতা। যুদ্ধের ফাঁক-তালে উঁকি
মারে তরবারির রেখা। মোমবাতি জ্বেলে কে পাহারা দেবে গুহামুখ? কপালের ভাঁজ মুছে পাবো কি
ভোরের দেখা? জোনাকির আলো সরিয়ে ভিজিয়ে রাখি মুত্যুর ছায়া। উড়বার আগে কেটে রাখি
সমূহ ডানা।
ভোজের বৈঠক
হাওয়াদের ঘরবাড়ি আছে। জমিজিরাতে বুনে দেয় ধূলিকণার বীজ। ঝড় ও ঝগড়ার রাতে লাঙল
বিফলে গেলে খুশি খুশি থাকে। সেবার অঝোর ধারা। মানুষ সমান স্রোতে হাতি ভেসে আসে।
পাক খায় জল ও কাদা। ঘূর্ণির মতো ঘুরে উপরে উঠে যায় বায়ুচোখ।
হাওয়া, বন্ধনে বেঁধেছো যাকে—নীল হয়ে সেও জেগে থাকে। মায়া ও মালতী ফেলে গ্রহণ করে
ঘাসের শরীর। সমুদ্রের ঢেউ হয়ে ভিজিয়ে রাখে মোমের সংসার। বিষের গহীন পথে পায়ে পায়ে
ফ্যাকাশে হয় ভোজের বৈঠক।
মাছির গুঞ্জন
জন্ম সত্য জেনে যাপনে রাখি ক্ষরণের পাহাড়। ডিঙির আলোর মতো আমাদের জীবনের ভাঁজ।
ফল ও ফসলের বাসনা পুঁতে রাখি লালিমবাগানে। চিচিঙ্গাস্বভাবে বসে থাকি ঝুল-দোলনায়।
গুপ্তকূপের ভেতর কে শুকায় বোধের চাতাল? মৃত্যু ফিকে করে ঢেউ হয়ে খেলি লুকাচণ্ডি খেলা।
আয় আয় চোখ। আয় আয় পা।
হারিকেন নিভে গেলে কানকথা ভারী হয়ে ওঠে। ভয় ও ভারত্বে বেড়ে যায় মাছির গুঞ্জন।
সহজিয়া ঋণ
এত মায়া। এত ভালোবাসা। আকাশ সমান স্নেহের শাড়ি। আমি কার কাছে রাখি! ঘাসফুল
অ্যাকুরিয়ামে প্রজাপতি হই। পাখার ওপর কে ছুঁয়ে দেয় বসন্ত-রঙ! সেইসব মহৎ শত্রুদের প্রণতি
আজ। যাদের বাঁকা হাসিতে গড়িয়ে গেছে মার্বেল-পথ। ভাঙা চুড়ি কুড়িয়ে পার হল বালকজীবন।
সময়ের বড়শিতে এখন মাছ হয়ে ঝুলে থাকি। ঠোঁট বেয়ে রক্ত ঝরে। সেই লাল জমা হয়
পাতালগাঙে। হৃদক্যানভাসে ফুটে ওঠে অজস্র মুখ। ছিঁড়ে যাচ্ছে মুখোশের দিন। শোধ কি হবে
সেই সহজিয়া ঋণ?
Leave a Reply